ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ

চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে যা ভাবছে ছাত্র সংগঠনগুলো

  • আপলোড সময় : ১০-০৬-২০২৪ ১০:২৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৬-২০২৪ ১০:২৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে যা ভাবছে ছাত্র সংগঠনগুলো চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে যা ভাবছে ছাত্র সংগঠনগুলো
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে দেয়া পরিপত্র সম্প্রতি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্টএক রিটের শুনানির পর এমন সিদ্ধান্ত দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতহাইকোর্টের এমন সিদ্ধান্তে এরইমধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরারায়ের পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেছেন তারাদাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও দিয়েছেনসরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর অবস্থান এখন কী- তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনেজাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র শক্তিসহ প্রায় সব ছাত্র সংগঠনই সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিপক্ষেতবে কোটা পুনর্বহালকে আদালতের বিষয়বলে এ ব্যপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি ছাত্রলীগের কোনো কোনো নেতা
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাবি শাখার সভাপতির সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের কারও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নিছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের কাছে সংগঠনের অবস্থান জানতে চেয়ে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলে কোনো জবাব দেননি তিনিতবে ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, এটা যেহেতু আদালতের বিষয়, আদালতের বিষয় আইনগতভাবেই সমাধান করা উচিতআদালত কোনো সিদ্ধান্ত নিলে দেশের নাগরিক হিসেবে সে ব্যাপারে মন্তব্য করা উচিত নয়আমার মনে হয়, এর বিপক্ষে যদি কারও বক্তব্য থাকে সেটা আইনগতভাবেই দেখতে হবেছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, আমরা ২০১৮ সালেও শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়েছিতবে সে সময় সরকার একটা দুরভিসন্ধির আশ্রয় নিয়েছিলসে সময়ের আন্দোলনে কিন্তু কেউই কোটা বাতিল চায়নিসরকার এটা বাতিল করেছিল এই জন্য যে, পরে তারা হাইকোর্টকে ব্যবহার করে যেন এটা আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারেহাইকোর্টকে ব্যবহার করে সরকার যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছে, ঠিক একইভাবে এটাও (কোটা পুনর্বহাল) করেছেসরকার কিন্তু এখনো এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নিসরকার চেয়েছেই এই মামলা হেরে যাওয়ার মাধ্যমে এটাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেনাসির বলেন, সরকারের মদদপুষ্ট ও আজ্ঞাবহ একটি সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যা করেছে সেগুলো সবাই প্রত্যক্ষ করেছেতাদের দাবির মুখেই সরকার এই কোটা পুনর্বহাল করছেএর কারণ, কোটাব্যবস্থা পুনর্বহাল হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই বেশি সরকারি চাকরিতে ঢুকে যেতে পারবেফলে আমরা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বলেন, আমরা সবসময়ই কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম২০১৮ সালে যখন আন্দোলন হয়েছিল তখনো আমরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিশিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তখন সরকার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চেতনা থেকে সরে গিয়ে কোটা প্রথা বাতিলের ঘোষণা দিলোআমরা তখনই বলেছি এটা ভবিষ্যতে আবার কোটা ফিরিয়ে আনার কৌশলএই সুযোগটা সরকার ওই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তৈরি করে রেখেছিলতিনি বলেন, আমরা তো কোটার সংস্কার চেয়েছিলাম, বাতিল নয়আদিবাসী বা প্রতিবন্ধী যারা আছেন তাদের জন্য তো কোটা দরকার আছেকিন্তু আমরা এখানে দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধ কোটায় যারা সুযোগ পাচ্ছেন তাদের জন্য অনেকটা পোষ্য কোটা আকারে সুযোগটা রাখা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিকগণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান বলেন, ২০১৮ সালে ছাত্রসমাজের দুর্বার আন্দোলন যখন তীব্র দমন-পীড়ন করেও থামানো যায়নি, তখন সরকার কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করে সব ধরনের কোটা বাতিলের চটকদার সিদ্ধান্ত নেয় সরকারফলে শুরুতেই অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, আদিবাসী কিংবা প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করা হয়কোটা বাতিল করার মধ্য দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিকতাকে করা হয় প্রশ্নবিদ্ধআন্দোলনকে বিভ্রান্ত করা হয়২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত কার্যত আজকের অন্যায্য কোটা প্রথা পুনর্বহালের ভিত রচনা করেছিলতিনি বলেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা প্রধানত ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কারের দাবি করেছিলচাকরিতে ১০ শতাংশ কোটা, অভিন্ন বয়সসীমাসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি তখন জনসম্মুখে আসেকিন্তু কোটা সংস্কার না করে বাতিলের ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনার দুরভিসন্ধি নিহিত ছিল
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিক বলেন, সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের গণবিরোধী ও বৈষম্যমূলক রায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও তা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাচ্ছিকোনো দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতা করবার যৌক্তিক উদ্দেশ্যে চাকরির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কোটা বা অংশ বরাদ্দ রাখা যায়আমাদের দেশেও সেভাবে বহাল রাখা প্রয়োজন বলেই আমরা মনে করিতবে ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা একটি বৈষম্যমূলক সমাজে সে বৈষম্যকে আরও তীব্র করে তুলবেবাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করা কিংবা তাদের পরিবারের সহযোগিতার প্রশ্নেও আমাদের কোনো দ্বিধা নেইতাদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা বজায় রেখেই আমরা বলতে চাই এই ৩০ শতাংশ কোটা সংস্কার হওয়া প্রয়োজন
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে উদ্দেশ্যে লাখো লাখো শহীদ জীবন দিয়েছেন, কোটাব্যবস্থা সে উদ্দেশ্য ম্লান করে দিচ্ছেপশ্চিম পাকিস্তানও এভাবে সরকারি চাকরিতে তাদের জন্য বেশি কোটা রাখতমুক্তিযোদ্ধারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, তারা কোনো কোটার জন্য যুদ্ধ করেননিস্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এই কোটা রাখার যৌক্তিকতা নেইএকটি চক্র মুক্তিযুদ্ধের নামে ভুয়া সনদ বিক্রি করে, ব্যবহার করে চাকরি নিচ্ছে, প্রমোশন পাচ্ছেমুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে সংগঠন খুলে তারা এই অসাধু কাজগুলো করছেকোটা ফিরিয়ে আনতে তাদেরকেই বেশি তৎপর দেখা যাচ্ছেমূলত মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায় কোটাব্যবস্থাসরকারি চাকরিতে কোটা থাকলে কোটার ফাঁক-ফোকর দিয়ে দলীয় অনুগত লোকজন, ভাই ভাতিজাদের নিয়োগ দেয়ার সুযোগ থাকে
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স